রূপপ্রতীকের ধারা

DOI: https://doi.org/10.62328/sp.v1i1.7

Authors

  • অজিতকুমার গুহ University of Dhaka Author

Keywords:

রূপপ্রতীকের ধারা, কালিদাস, অলঙ্কারশাস্ত্র

Abstract

মহাকবি কালিদাসের রঘুবংশকাব্যে যেখানে রাজা কপিলবর্ণের নন্দিনী গাভীকে নিয়ে দিনশেষে আশ্রমে ফিরে আছেন আর রাণী আশ্রম প্রাঙ্গনে তাঁকে অভ্যর্থনা কোরছেন,—রাজা ও রাণীর মধ্যবর্তী নন্দিনীর প্রতি তাকিয়ে কবির মন হঠাৎ বলে উঠলো—“দিনক্ষপামধ্যেগতৈবসন্ধ্যাঃ” — অর্থাৎ দিন ও রাত্রির সঙ্গমস্থলে অবস্থিত সন্ধ্যার মত। অপরাহ্নের অপরূপ দ্যুতিমান আকাশের নিচে এই একটি অতি পরিচিত সাধারণ ঘটনার মধ্যেও ব্যঞ্জনার এক অপরূপ সুর লাগলো। রাজার প্রদীপ্ত স্পষ্ট-প্রখর কান্তির সঙ্গে দিনের, রাণীর স্নিগ্ধ মাধুর্যের সঙ্গে রাত্রির আর পল্লবরাগভাম্রা নন্দিনী গাভীর সঙ্গে গোধূলির পিঙ্গলরশ্মিজাল-উদ্ভাসিত রূপের তুলনা উপমার দিক থেকে অসাধারণ কিছু নয়, কিন্তু কবি এই প্রাত্যহিক সাংসারিক ঘটনার মধ্যে পারিপার্শ্বিক প্রকৃতি-পরিবেশ এমন করে মিলিয়ে দিয়েছেন যে সেই একটি সন্ধ্যা চিরদিনের মত আমাদের মানসলোকে দীপ্তি দিতে লাগলো, — একদিনের কয়েকটি মুহূর্ত অনন্ত গোধূলিতে পর্যবসিত হয়ে গেল। কবি যদি কেবলমাত্র অলঙ্কারশাস্ত্রের সীমিত উপকরণের মধ্যে আবদ্ধ থাকতেন, জীবনসমুদ্রের ভাসমান ফেনপুঞ্জের বর্ণচ্ছটাই কেবল যদি তাঁকে মুগ্ধ কোরতো তাহ'লে এই প্রাত্যহিক তুচ্ছ ঘটনায় এত সহজভাবে আনন্দসৃষ্টি তাঁর পক্ষে সম্ভব ছিল না। অনুভূতির যে অতল গভীরতায় কবির মন অবগাহন করেছে, রসাবেশের যে আবেগে তাঁর মন পরিপ্লুত তাই তাঁর শিল্পসৃষ্টিতে ক্ষুদ্র, খণ্ড, ও বিচ্ছিন্ন বস্তুতে জীবনের অখণ্ড রূপায়ণ ও আকাশের সীমাহীন বিস্তৃতি দিয়েছে।

Downloads

Published

1957-06-15

How to Cite

রূপপ্রতীকের ধারা . (1957). সাহিত্য পত্রিকা - Shahitto Potrika | University of Dhaka, 1(1), ১৩৬-১৪২. https://doi.org/10.62328/sp.v1i1.7