গ্রন্থ পরিচয় : বাংলা সাহিত্যের ইতিবৃত্ত (আধুনিক যুগ)
Abstract
কয়েক বছর আগে কেন্দ্রীয় পাকিস্তান সরকারের পরিকল্পনা অনুযায়ী বাংলা সাহিত্যের একটি ধারাবাহিক ইতিহাস রচনার ভার পড়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের উপর। ইতিহাসটির দ্বিতীয় খণ্ড সদ্য প্রকাশিত হয়েছে। এটি লিখেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যক্ষ মুহম্মদ আবদুল হাই এবং করাচী বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যক্ষ সৈয়দ আলী আহসান। আধুনিক যুগ অর্থাৎ বৃটিশ আমল থেকে শুরু করে পাকিস্তানোত্তর যুগের বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস এঁরা আলোচনা করেছেন। প্রাচীন ও মধ্য যুগের ইতিহাস লিখেছেন ডক্টর শহীদুল্লাহ্, সেটি প্রকাশিত হবে পরে।
নানা কারণে আলোচ্য গ্রন্থটি বিদগ্ধ ও সাহিত্যামোদী সমাজের কৌতুহলপূর্ণ দৃষ্টি আকর্ষণ করবে। প্রথমত প্রাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পর এ ধরণের বই আর লেখা হয়নি। দ্বিতীয়ত বইটি লেখা হয়েছে কেন্দ্রীয় সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায়। তৃতীয়ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এর প্রকাশের দায় গ্রহণ করে এর গুরুত্ব আরো বাড়িয়ে দিয়েছেন। বাংলা সাহিত্যের প্রামান্য ইতিহাস হিসাবেই বইটিকে বিচার করা বোধহয় কর্তব্য।
মুহম্মদ আবদুল হাই ও সৈয়দ আলী আহসান প্রণীত এই বাংলা সাহিত্যের ইতিবৃত্তটিকে এ রকমের অন্যান্য বই এর সঙ্গে তুলনা করে দেখবার প্রবৃত্তি হওয়াও খুব স্বাভাবিক; কারণ বহু আশা নিয়ে পূর্ব পাকিস্তানের শিক্ষিতসমাজ এর প্রতীক্ষা করছিলেন। তাই স্বভাবতই প্রশ্ন উঠবে, লেখকদ্বয় এই ইতিবৃত্তে বাংলা সাহিত্য সম্বন্ধে নূতন তথ্য উদ্ঘাটিত করতে পেরেছেন কিনা বা সুবিদিত কোন তথ্যের উপর নতুন ভাবে আলোকপাত করেছেন কিনা। বাংলা সাহিত্যের প্রচলিত ইতিহাসগুলো সম্বন্ধে পূর্ব পাকিস্তানবাসীর অভিযোগ অনেক। পূর্ব পাকিস্তান অঞ্চলের দান, বিশেষত মুসলমান সাহিত্যিকদের রচনার সম্যক পরিচয় খুব কম গ্রন্থেই পাওয়া যায়, পুঁথি সাহিত্যের উল্লেখ কচিৎ দেখা যায়। তাছাড়া বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের বিকাশের ধারা সম্পর্কে মামুলী কতকগুলো ধারণার পুনরাবৃত্তি থাকে সব ইতিহাসে।